মার্চ ২৮, ২০২৪ ৩:৫৬ অপরাহ্ণ || ইউএসবাংলানিউজ২৪.কম

‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কবিতা’

১ min read

শব্দাবলি হলো একজন কবির প্রকৃত হাতিয়ার। শেষ পর্যন্ত মানুষের পক্ষেই দাঁড়ায় কবিতা। যা মানবকল্যাণের জন্যই উচ্চারিত হয় বার বার। শব্দই রুখবে মৌলবাদ। কবিতার আলোতে ভেসে যাবে সকল সাম্প্রদায়িক আঁধার। এই প্রত্যয় নিয়ে নিউইয়র্কে, ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কবিতা’ আয়োজিত হয়েছে।

২৪ অক্টোবর, ২০২১ রবিবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে কবি ও আবৃত্তিকারদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশে বিশিষ্ট লেখক ও এ্যকটিভিস্ট আবু সাঈদ রতনের উপস্থাপনায় সূচনা বক্তব্য রাখেন কবি ফকির ইলিয়াস। তিনি বলেন, একজন মায়ের আঁচলে জমানো কিছু টাকা যখন কোনো মৌলবাদী দুর্বৃত্ত লুট করে নেয়- তখন একটি রাষ্ট্রসত্তাই লজ্জিত হয়।

একজন খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষের বাড়িতে বিনা কারণে ঢুকে যখন তার কিশোরী মেয়ে ধর্ষণ করা হয়- তখন মানুষের প্রকৃত পরিচয় রহিত হয়ে পড়ে! আমরা সেই বিবেক থেকেই আজ আখানে সমবেত হয়েছি।

ফকির ইলিয়াস বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা বাংলাদেশ সকল ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণীর মানুষের। এখানে মৌলবাদ সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।বাঙালী বীরের জাতি। আমরা অতীতেও হারি নাই। ভবিষ্যতেও হারবো না।

তিনি বলেন, অতীতে যে সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো হয়েছিল এর সুষ্ঠু বিচার হয়নি। যদি হতো, তাহলে কুমিল্লা,নোয়াখালী, রংপুরের পীরগঞ্জে এমন ন্যাক্কারজনক ফগটনা ঘটতো না। সরকারকে এসব কঠোর হাতে দমন করতে এগিয়ে আসতে হবে।

কবি ফকির ইলিয়াস বলেন, যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের পুরোপুরি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাদের পুনর্বাসন করতে হবে।তা না করতে পারলে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুন্ঠিত হবে।

বিশিষ্ট আবৃত্তিকার ও ফটোসাংবাদিক নজরুল কবীর প্রতিবাদ ও কবিতাপর্বে বলেন, বিশ্বের কোথাও আর এমনভাবে সংঘবদ্ধ সাম্প্রদায়িক আক্রমণের নজির দেখা যায় না।বাংলাদেশে এটা বার বার কেন হচ্ছে- এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে।

বাংলাদেশে তারা সংখ্যায় অধিক যারা মানবতার পক্ষে দাঁড়ান ও কথা বলেন। তাই আমরা সংখ্যায় কম- এটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই।শুধুমাত্র রাষ্ট্রকে কঠোর হয়ে সকল অশুভ শক্তিকে দমন করতে হবে।

বিশিষ্ট কবি শাহীন ইবনে দিলওয়ার বলেন, বাঙালী জাতি কি ভুলে গেল তার গৌরবের ইতিহাস! আমরা কি ভুলে গেলাম আমাদের অতীতের সকল সম্প্রীতির ঐতিহ্য।বাংলাদেশে আজ যে নগ্ন আক্রমণ হচ্ছে, তা বিশ্ব-বিবেককে হার মানিয়েছে।

আমরা এমন বাংলাদেশ চাইনি। আমাদের প্রজন্মকে আজ ঘুরে দাঁড়িয়ে সকল অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।

সমাবেশে তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা ও এ্যকটিভিস্ট নুরুল আমিন বাবু বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার এগুলো কঠোর হাতেই দমন করে যাচ্ছে, এবং যাবে ইনশাআল্লাহ। এ বিষয়ে কোনো আপোস হবেনা,হতে পারে না।

তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

আবৃত্তিকার গোপন সাহা বলেন, সংখ্যালঘু শব্দটি শুনে যে শিশু বড় হয় তার মাঝে একটা ভয় কাজ করে! কারণ যে বুঝতে পারে, আমি সমাজে ছোটো! আমরা কি এই শব্দটি পরিহার করতে পারি না! কেন পারছি না!

মানুষ তো সকলেই সমান।ভোট তো সবার একটাই! তাহলে এই হীন বৈষম্য কেন! কেন আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বার বার বাংলাদেশে আক্রান্ত হচ্ছেন! আমরা এর চির অবসান চাই। এই শব্দবাণী নিয়েই আজ আমরা এখানে হাজির হয়েছি।

সমাবেশে কবিতা পাঠ করেন কবি শাহীন ইবনে দিলওয়ার, কবি আনোয়ার সেলিম, কবি ফারহানা ইলিয়াস তুলি, ছড়াকার খালেদ সরফুদ্দীন, কবি মৃদুল আহমেদ, এ্যকটিভিস্ট ভাস্বতী দে বহ্নি।

কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নেন- বিশিষ্ট আবৃত্তিকার নজরুল কবীর,বিশিষ্ট আবৃত্তিকার গোপন সাহা, অন্যতম আবৃত্তিকার পারভীন সুলতানা, তরুণ আবৃত্তিকার সাদেক শিবলী প্রমুখ।

বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া হামলার মর্মস্পর্শী বর্ণনা দিতে গিয়ে উদিতা বলেন, আজ যে বাড়িটি আক্রান্ত হলো, সেই বাড়ির শিশু কিশোর-কিশোরীটি একটি গ্লানিময় বেদনা নিয়েই বেড়ে উঠবে আজীবন। এর দায় কে নেবে? রাষ্ট্র এই বিষয়ে কতটা সতর্ক আজ!

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত এই অবস্থার চির-অবসান ঘটাতে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে এ্যকটিভিস্ট নুশরাত এলিন, সমাজকর্মী আমজাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।

-তুহিন নিজাম

Comments

comments

More Stories

১ min read
১ min read
১ min read

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!