কলম্বাস ((শেষ পর্ব)
১ min readইতিহাসের বিচারে কলাম্বাস সম্পূর্ন নির্দোষ হয়তো নন, তবে এ কথা তো সত্য তিনিই উপনিবেশবাদের বীজ বপন করেছিলেন আর তার কুফল পৃথিবীর অনেক দেশ অনেক শতাব্দী ধরে যার যার সুবিধা মতো চালিয়ে গেছে।আবার তিনি ক্রীতদাস প্রথার সমর্থনও করেছিলেন।সেইসাথে দাসদের প্রতি স্পানিশদের বর্বর ব্যাবহার আজও সভ্য জগত মেনে নিতে পারেনি।তবে এ কথাও সঠিক নতুন আবিস্কৃিত দেশ গুলিতে খনিজ সম্পদ ছিল প্রচুর।সেই দিকে কলম্বাস অতটা লোভী না হলেও তার পরে ইউরোপ থেকে যারা সম্পদের লোভে এসেছিল তারা সাংঘাতিক অত্যাচার করেছিল আদি অধিবাসীদের।তবে এ কথাও চির সত্য আবিষ্কারক হিসাবে কলাম্বাস পৃথিবীর বুকে চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে ।
শেষ কিস্তিতে ২টি সত্য গল্প এবং জীবিত ও মৃত অবস্তায় কলাম্বাস যে একজন সত্যিকার অভিযাত্রী ছিলেন তার প্রমান মেলে তারই অভিযানের বৃতান্ত জানলে।
কলাম্বাসের শেষ অভিযানে মৃত্যুর মুখামুখি থেকে তার উপস্হিত বুদ্ধি’র কারনে বেঁচে যান।যেদিন তিনি হিংস্র আদিবাসীদের হাতে বন্দী হলেন সেদিন ছিল পূর্ন চন্দ্রগ্রহণের সময়, এটি কলম্বাস জানতেন তাই শেষ চেস্টা করলেন জীবন বাঁচাতে।তিনি তখন তাদেরo সর্দারকে বল্লেন, যদি তাকে মুক্তি দেওয়া না হয় তাহলে সৃস্টিকর্তা তাদের ধ্বংস করে দেবে, এবং সেটা আজ রাতেই টের পাবে কি ভাবে চাঁদ ক্ষয় হয়ে যায় ।সে রাতেই যখন দেখা গেলো চাঁদ গ্রাস হচ্ছে তখন তারা ভয় পেয়ে কলম্বাস কে মুক্তি দেয় ।
এবার দ্বিতীয় গল্প হলো-একবার এক সভায় কলম্বাসের আবিস্কারের কৃতিত্ব কে সন্দেহের চোখে দেখে নানামুখরোচক কথা হচ্ছিল, কেউ কেউ বলছিল , এ এমন কি জাহাজ নিয়ে কেউ ঘুরতে ঘুরতে গেলে আবিস্কার করাই যায়, সেখানে কলাম্বাস ও – ছিলেন ,তিনি একটি হাঁসের ডিম দেখিয়ে সকল কে বল্লেন,এই হাঁসের ডিমটাকে যে কোন উপায় কেউ টেবিলের উপর লম্বাভাবে দাঁড় করিয়ে রাখতে পারেন ?অনেকে চেস্টা করেও কেউ না পেরে বল্লো,এটি অসম্ভাব।তখন কলম্বাস ডিমের মাথাটি একটু ঠুকে সামান্য ভেঙে টেবিলের উপরে দাঁড় করিয়ে দিলেন, তারপর বল্লেন, এ কাজটা খুবই সামান্য।কিন্তু এত লোকের মধ্যে আমিই প্রথম উপায়টা দেখিয়ে দিলাম। – জীবিত যখন ছিলেন তখন কলম্বাসের নানা অভিযানের কাহিনী ও দেশ আবিস্কারের কথা জানি , কিন্তু তিনি মারা যাবার পরও যে বিভিন্ন দেশ- বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন সেটি কি আমরা জানি ? আর একটা মূল্যবান কথা হলো,ঘরের ছেলে আর ঘরে ফিরে যেতে পারেন নি জীবনে কিংবা মরনে! সেই যে জন্মভূমি ইতালী ছাড়লেন আর যাওয়া হলো না।
কলাম্বাস মারা গিয়েছিলো ভ্যালাডোলিড শহরে, সেখান থেকে তার মৃতদেহ নিয়ে সমাধি দেওয়া হয় সান ডেমিঙোতে।২৯০ বছর পর সান ডোমিঙো ফরাসি অধিকারে এলে স্পেন তাদের গৌরবের মানুষটিকে ওখানে আর রাখতে চাইলেন না তাই কলম্বাসের মৃতদেহ মাটি খুঁড়ে দেহবশেষটি তারই আবিস্কৃত দেশ কিউবার হাভানা শহরে বিরাট এক স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে সমাধি নতুন ভাবে রাখা হলো।
কলম্বাস তো এক স্হানে চুপচাপ শুয়ে থাকার লোক নন। ১০০ বছর পর আমেরিকার সঙে স্পেনের যুদ্ধ শুরু হলে কলাম্বাসের শবাধার তুলে নিয়ে আশা হলো স্পেনে।এখন পর্যন্ত সেখানেই তিনি শায়িত আছেন ।
– (সমাপ্ত)
-ফাহীম রেজা নূর